Burned in the same fire

We are two different bodies
Distance to our destination
At an angular distance of one hundred and eighty degrees
But the heart is tied with the same thread.
Your existence in my soul
Want to deny again and again
nevertheless
Enchanting eyes, sensual lips
Enticing breasts in grooves, deep navel
Wide waist, blossoming vagina
The source of the Ganga is a mouth stream
I am lost in you.

I do not run Turkish horse
In every beat of your heart?
If the butterfly itself or
Kamdev said clearly,
I’m not in your love or work,
Those eyelids don’t close thinking of me
That wretch does not call for my touch
That vaginal petal was not wetted even once
In the weight of my sensuality
You can refuse if you want
I will still shout,
Everything is the trick of the gods
And your fear of admitting the truth.
We are two different bodies
Yet we burn in the fire of the same desire.

বহু সহস্রাব্দ পর দেখা

ছবি : সংগৃহীত

মিনটাকা
শিকারী নক্ষত্রপুঞ্জের সবচেয়ে উজ্বল নক্ষত্র
প্রিয়তমা আমার ৷
দেবী হাথোর আশির্বাদ পুষ্ট দেবী তুমি
স্মরণ করো আমাদের প্রথম সাক্ষাতের কথা,
বহু সহস্রাব্দ আগের সেই দিনটির কথা
স্মরণ করো সুযোদ্ধা মিনটাকা ৷
নীলনদ ঘেষা হাথোর মন্দিরে
আমাদের প্রথম সাক্ষাতের কথা স্মরণ করো,
স্মরণ করো প্যাপিরাস গুল্ম ঘেরা হ্রদে
বুনোহাঁস শিকারের সেই আলৌকিক সকালের কথা,
স্মরণ করো ডোভ দ্বীপের কথা
যেখানে কাদাপানিতে আমরা প্রথম স্পর্শ পেয়েছিলাম ৷
নিম্ন মিশরের রাখাল রাজা অ্যাপিপি আভিরিসের কন্যা
মিনটাকা
যে আটজন যোদ্ধা ভাইয়ের একমাত্র বোন
স্মরণ করো বহু সহস্রাব্দের পুরোনো স্মৃতি ৷
স্মরণ করো মহান প্রভু আমান রা এর উত্তরসুরি
হুরাসের প্রতিনিধি উচ্চ মিশরের অধিপতি
ট্যামোস বংশীয় যুবক ফারাও নেফারকে
যার সাথে বাজ পাখি শিকারে যেতে,
যার বাগদাত্তা হয়েছিলে মহান হাথোর মন্দিরে ৷
চোখ বন্ধ করে ফিরে তাকাও বহু সহস্রাব্দ পেছনে
সেইসব প্যাপিরাস গুলোকেকে পাঠ করো
অনুলেখকগন যা লিখেছিলেন আমাদের নিয়ে ৷
স্মরণ করো আমার উজ্বল তারা,
স্মরণ করো মিনটাকা ফারাও নেফার সেটি কে ,
যে হুরাসের আর্শিবাদে আবার তোমার সামনে ৷

( প্রিয় রুদ্র’র হয়ে প্রিয় তসলিমাকে লেখা চিঠি )

প্রিয় সহচর,
জানিনা তোমাকে সকাল বলে কেউ ডাকে কিনা ৷ আমিই ডাকতাম তোমাকে সকাল বলে ৷ সকাল মানে নতুন সূর্য , নতুন দিন, নতুন স্বপ্ন ৷ আঁধার ঠেলে বেঁচে থাকার প্রেয়না দেয় সকাল ৷ জানো সকাল, একটি সকালের স্বপ্ন আমি আজও দেখি , যেদিন উগ্র ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের খড়গ মরচে ধরে নষ্ট হয়ে যাবে তুমি ফিরে আসবে সেই মাটিতে যেখানে আমরা স্বপ্ন দেখতাম , কবিতা লিখতাম , যে মাটি আমাদের প্রেম চুম্বনের সাক্ষী হয়ে আছে ৷ আমি সেই মাটিতেই শুয়ে আছি আমার সকালের অপেক্ষায় ৷ জানি না আমার সকাল আসবে কিনা ৷ সেই সকাল আমার সকালকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিতে পারবে কিনা তবুও স্বপ্ন দেখি সেই সকালের ৷ সকাল যদি কখনও সেই সকাল আসে তবে কিছুক্ষণ এই মাটিতে খালি পায়ে হাঁটবে ৷ কতদিন তোমার পায়ের শব্দ শুনি না ৷ যদি হঠাৎ আমার স্পর্শ পেতে ইচ্ছে হয় তবে এই মাটির ধুলিকণা গায়ে মাখবে ৷ তাতেই আমার স্পর্শ পাবে কারণ আমি এই মাটিতেই শুয়ে আছি ৷ যদিও আমরা আত্মা বা পরম আত্মায় বিশ্বাসী ছিলাম না কোন কালেই তবুও এই মাটিতেই আমাকে খুঁজো কারণ আমরা ভালোবাসায় বিশ্বাসী ছিলাম ৷ পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় শক্তি কখনও নিঃশেষ হয় না শুধুমাত্র অবস্থার পরিবর্তন ঘটে ৷ আমাদের ভালোবাসাও একটি অতি উচ্চ মাত্রার শক্তি ৷ আর আমার দেহের সাথে সাথে সেই ভালোবাসা এই মাটিতে মিশে গেছে তাই আমাকে ভালোবাসতে ইচ্ছে হলে, আমার বুকে মাথা গুজতে ইচ্ছে হলে এই মাটিতেই কিছুক্ষণ মাথা গুজো ৷ দেখবে আমাকে পাবে ৷

প্রিয়তমা সকাল, তোমার কলম আরো ধারালো হয়েছে যা উন্মাদদের আরো উন্মাদ করছে তবুও আমি স্বপ্ন দেখি আমাদের সেই সকাল আসবে ৷

ইতি
সেই সকালের অপেক্ষায়
তোমার আকাশ

নিলুর অপেক্ষায়

নীলাঞ্জনা ৷গোলগাল মুখশ্রী,শ্যামলা,সুঠাম দেহের অধিকারিণী , উচ্চতা পাঁচ ফিট আট ইঞ্চি ৷বাংলাদেশের জলহাওয়ায় তার উচ্চতাটা ইর্ষনীয় ৷ ধন কুবের মায়ের পিতৃহারা একমাত্র সন্তান ৷শখের ফটোগ্রাফার আর এডভাঞ্চার প্রিয় মানুষ ৷ আমি তাকে নীলু বলে ডাকতাম ৷ নিলুর সাথে পরিচয়টা বেশ কাকতালীয় ভাবেই ৷বন বাঁদাড়ে ঘুরে বেড়ানো আমার ছোট বেলার নেশা ৷একটু ছুটি পেলেই বন-বাঁদাড়, পাহাড়-ঝরণায় ঘুরে বেড়ায় আমি ৷সে বার বর্ষায় অফিস থেকে তিনদিনের ছুটি নিয়ে ব্যাগপত্র গুছিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম রেমা-কালেঙ্গা রিজার্ভ ফরেস্টের উদ্দেশ্য ৷ বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চিরহরিৎ বন ৷ বিশাল আয়তন আর অসংখ্য পশুপাখির সমাহার ৷ ভারতীয় সীমানা ঘেষা এ পাহাড়ী বনাঞ্চলটি শহর থেকে অনেক দুরে ৷ যোগাযোগ ব্যবস্হাও নাজুক ৷ লোকজন খুব কমই আসে এখানে ৷ ঘন জঙ্গল , ধানের ক্ষেত, বনের ভেতর একটা ছোট গ্রাম আর বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একটা ক্যাম্প আছে ৷ কংক্রিটের শহর থেকে বের হয়ে এর চেয়ে ভালো সময় কাটানোর জায়গা খুব কমই আছে ৷ একা একা ট্রাকিং করে ফিরছিলাম ৷ হঠাৎ দুটি টেইলের মিলনস্হলে ভুত দেখার মত নিলুর সাথে দেখা ৷ পিঠে ট্রাভেল ব্যাগ, কালো চশমা, হাতে লম্বা লেন্সের একটা ক্যামেরা ৷
— হেই্ মিস্টার ৷ এখানে এসে কারো সাথে দেখা হয়ে যাবে ভাবতে পারিনি ৷ আমি নীলাঞ্জনা ৷
বলে হাত বাড়িয়ে দিলো ৷ হাত মিলাতে গিয়ে নিজের মধ্যে একটা অন্যরকম অনুভুতি অনুভব করলাম ৷ আমতা-আমতা করে বললাম ৷
–আমি শ্রাবণ ৷
— হাটতে হাটতে ক্লান্ত হয়ে গেছি ৷ চার ঘন্টার ট্রাকিং ৬ ঘন্টায় শেষ করলাম ৷ ছবি তোলার অভ্যাস আছে তো তাই ৷আসুন বসে কথা বলি ৷
— হ্যাঁ শিওর ৷
দুজন বনবিভাগের বানানো একটা কংক্রিটের বেঞ্চে বসে আলাপ জুড়ে দিলাম ৷ মুলত আজকের ট্রাকিং নিয়েই আলোচনা ৷ তখন পড়ন্ত বিকাল ৷ রেইন ফরেস্টে রাত নামে দ্রুত ৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই সন্ধ্যা হয়ে এলো ৷ নীলাঞ্জনা কে জিজ্ঞেস করলাম
— রাতে থাকবেন কোথায় ?
— হবিগঞ্জে অথবা শ্রীমঙ্গলে গিয়ে থাকতে হবে ৷ এখানে তো থাকার ব্যবস্থা নেই ৷
— কিন্তু এখন তো সন্ধ্যা লেগে গেছে ৷ ফেরার সিএনজি পাবেন না ৷ পাঁচ টার পরে সিএনজি পাওয়া যায় না এখান থেকে ৷ যেতে হলে তো ৭/৮ কিলোমিটার হাটতে হবে ৷
নিলুর চেহারায় চিন্তার ছাপ দেখতে পেলাম ৷
— তাহলে এখন উপায় ( নিলু)
কন্ঠে উদ্বিগ্নতা ছড়ানো ৷
–আমি এখানের বাংলোটা ভাড়া নিয়েছি দুইটি রুম আছে ৷ চাইলে একরুম আপনি ব্যবহার করতে পারেন ৷ ( আমি)
— কিন্তু খাবো কি ? ভীষণ ক্ষুধা পেয়েছে ৷
— বাংলোর কেয়ার টেকারকে বলেছি আমার জন্য রান্না করতে ৷ ভালো কিছু তো পাওয়া যায় না এখানে ৷ গ্রাম থেকে দেশী মুরগী কিনে ঝোল করবে আর মোটা চালের ভাত ৷
— ওয়াও ! অসাধারণ ৷ তাহলে আজ থাকছি আপনার সাথে ৷ কিন্তু মাকে জানাই কি করে ? এখানে যে নেটওয়ার্ক নেই ৷
–বাংলোতে হালকা নেটওয়ার্ক পাবে ৷ ওখানে এন্টেনার ব্যবস্থা আছে ৷
— অহ আচ্ছা ৷ তাহলে চলুন যাই ৷
নিলুর মুখ থেকে দুচিন্তা আর উদ্বিগ্নতা দূর হয়েছে ৷দারুণ দেখতে মেয়েটা ৷ আমার হৃদয়ের এন্টেনায় অন্যরকম একটা ফিকোয়েন্সি অনুভব করলাম ৷ সন্ধ্যার পর পরই খাবার নিয়ে আসলো বাংলোর কেয়ারটেকার জামসেদ ৷ নিলুকে দেখে যেন ভুত দেখলো ৷
— স্যার আপনি বাংলো ভাড়া নিয়েছেন কিন্তু অহন লগে একটা মাইয়া মানুষ ! এইডা তো বিট অফিসার জানলে আমার চাকরি খাইয়া দিবো ৷ (জামসেদ)

নিলুর চেহারায় আবার চিন্তা আর উদ্বিগ্নতা ফুটে উঠলো ৷ আমি ধমক দিয়ে বললাম
— থামো ৷ তোমাকে বলেছিলাম না সন্ধ্যায় একটা সারপ্রাইজ পাবে ?
— জি স্যার ৷ (আমি)
— এটা তোমার ভাবি ৷ বাড়ি থেকে চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলো একাই আসতে পারবে ৷ আমার চেয়ে দুই ঘন্টা আগে বের হয়েছিল ৷ এসেছেও দু ঘন্টা আগে ৷ তোমাকে বলেছিলাম বেশি করে খাবার আনতে এনেছো ?
— জি স্যার ৷ আমি এখন আসছি স্যার ৷
— সকালের নাস্তাটা একটু আগে আগে বের হবো ৷
–জি আচ্ছা স্যার ৷ স্লাইকুম ৷
নিলু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে ৷ বললাম
–সরি একটু মিথ্যার আশ্রয় নিতে হলো ৷
— না না ঠিক আছে ৷ আমি ভাবছি আপনি কত সুন্দর করে সাজিয়ে মিথ্যা বলতে পারেন ৷ দারুণ উপস্থিত বুদ্ধি আপনার ৷
— না মানে এটা ছাড়া তো উপায় ছিলো না ৷
— হুমম বুঝেছি ৷ কিন্তু ওর সারপ্রাইজ কি ছিলো ?
একগাল হেসে বললাম
— একশো টাকা বকশিস ৷ কিন্তু সেটা আর বেচারার পাওয়া হলো না ৷ যাক যাবার সময় দিবো ৷ এখন গোসল করে ফ্রেস হয়ে নেন ৷ খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে ৷

গোসল, ডিনার শেষ করে দুজন আড্ডায় বসলাম ৷ দারুণ গানের গলা নিলু আর আমার কবিতা জমিয়ে আড্ডা হলো ৷ বাইরে ঝিঁঝিঁপোকা, শেয়াল আর নিশাচর পাখিরা বাদ্য বাজাচ্ছে ৷ গাঢ় অন্ধকারে ছেয়ে আছে ৷ জানালা দিয়ে বিশুদ্ধ বাতাস আসছে ৷ জোনাকি পোকারা আলোকিত করে আছে ঝোপঝাঁড় ৷ বেশ রাত পর্যন্ত আড্ডা হলো ৷ হঠাৎ একটু দূরে কয়েকটা হরিণ ডেকে উঠলো , বানরেরা কিচিরমিচির করে উঠলো ৷ একটু ভীত হয়ে পড়লো নিল ৷ বললাম
— বেশ রাত হয়েছে এবার ঘুমিয়ে পড়ুন ৷ আমি পাশের রুমে আছি ৷ দুই রুমের মাঝের দরজাটা আপনি ভেতর থেকে আটকে দিন ৷
বিছানায় শুয়ে চোখ বুজে আছি ৷ চোখের সামনে শুধু ওর মুখটা ভেসে উঠছে ৷ কাঁধ বরাবর ঘন চুল , বিলোল আঁখিযুগলের চাহনী, কানে বাজছে মনোহরণী সুর ৷ হঠাৎ মাঝের দরজটা খোলার শব্দ পেলাম ৷ কান খাঁড়া করে রাখলাম শুনেছি এভাবে আশ্রয় নেওয়া অনেকেই আশ্রয় দাতার সর্বনাশ করে , আমিও কি তবে ? তখন ই দরজা থেকে নিলুর গলার স্বর শুনতে পেলাম ৷
— শ্রাবণ ঘুমিয়েছেন ? আমার ঘুম আসছে না, ভয় করছে ৷ মাঝের দরজাটা খোলা রাখি ?
— হ্যাঁ অবশ্যই ৷ যদি আপনি সমস্যা মনে না করেন ৷
আর কোন কথা শুনতে পেলাম না ৷ নিলুকে ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম ৷ ঘুম ভাঙলো তখন সাড়ে সাতটা বাজে ৷ দেখলাম টেবিলটা সুন্দর করে সাজানো ৷ সিগারেটের ছাইদানিটা পরিস্কার ৷ ঘরটা তাজা ফুলের মিস্টি গন্ধে ৷ টেবিলের ফুলদানীতে তাজা বুনো ফুল শোভা পাচ্ছে ৷ মাঝের দরজা দিয়ে তাকিয়ে দেখলাম নিলু টেবিলে বসে কিছু লিখছে ৷ উঠে ওই রুমে গেলাম ৷
— শুভ সকাল ৷ বেশ সকাল সকাল উঠেছেন মনে হচ্ছে ? জামসেদ এসেছিল ?
শুভ সকাল ৷ নাহ আসেনি ৷
— তাহলে এসব কে করলো ?
— আমি ৷
বলে হাসতে শুরু করলো নিলু ৷
–পছন্দ হয়নি ?
–অবশ্যই হয়েছে ৷
–ভালো ৷ একটা কথা বলবো ভাবছি ৷
–বলুন ৷
–আপনার সাথে আরো দুদিন থাকতে চাই এখানে ৷ তারপর একসাথে ঢাকায় ফিরবো ৷ আসলে এতো বড় আর সুন্দর বন কি একদিনে দেখে শেষ করা যায় ?
— থাকুন না ৷ আমি আছি আরো দুই দিন ৷

সকালের নাস্তা সেরে বেড়িয়ে পড়লাম ৷ সঙ্গে শুকনো খাবার আর পানি ৷ সারাদিন ঘুরলাম ৷ অসাধারণ ছবি তুলে নিলু ৷ গল্প আড্ডা আর ঘুরাঘুরিতে শেষ হলো দিন ৷ রাতে আবার যথারীতি আড্ডা ৷ দুদিনের পরিচয়ে মানুষ এতো কাছের হতে পারে ! তৃতীয় দিন দুপুরে বের হয়ে পড়লাম ঢাকার উদ্দেশ্য ৷ স্থির হয়েছিল ট্রেনে ফিরবো ঢাকা ৷ শায়েস্তাগঞ্জে এসে দেখলাম সন্ধ্যার ট্রেন আজ আসবে না ৷ পরের ট্রেন রাত একটায় ৷ প্লাটফর্মে বসে আড্ডা দিয়ে কাটিয়ে দিলাম বাকি সময়টা ৷ এসময় নিলু তার পরিচয় বললো ৷ শিল্পপতি মায়ের একমাত্র সন্তান সে ৷ খুব ছোট বয়সে বাবাকে হারিয়েছে ৷ মা-ই তার কাছে বাবা-মা সব ৷ সেলফোন নং বিনিময় হলো ৷ যথা সময়ে ট্রেন আসলো ৷ ভোরে ঢাকায় পৌঁছালাম ৷ পরদিন থেকে অফিসের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম কিন্তু ভেতরটা শুন্য শুন্য লাগছে ৷ কি হলো আমার ? হৃদয়ের সকল প্রকোষ্ঠ জুড়ে কেবল নিলু ৷ বৃহস্পতিবার বিকালে হঠাৎ নিলুর ফোন ৷
–কাল তো ছুটি ৷ (নিলু)
–জি কাল ছুটি ৷
— কি প্লান করলেন ৷
— নাহ কোন প্লান করিনি ৷
— চলুন না কাল পানাম নগরী থেকে ঘুরে আসি ৷ আমি সকাল সাতটায় উত্তরায় ” সি শেল” এর সামনে অপেক্ষা করবো ৷
বলেই লাইন কেটে দিলো ৷ যদিও টানা কাজের চাপে ঘুমানোর দরকার ছিল কিন্তু নিলুর ডাক উপেক্ষা করার ক্ষমতা আমার নেই ৷ সকালে বের হয়ে পড়লাম একটু আগেই ৷ “সি শেল”এর সামনে আসতেই দেখলাম একটি RAV-4 গাড়ীর সামনে দাড়িয়ে আছে নিলু ৷ আজ তাকে মায়াবী সুন্দরী লাগছে ৷ গাড়ীর সামনে বসতে বলে নিজে বসে পড়লো ড্রাইভিং সিটে ৷সারাদিন ঘুরাঘুরি করে ফিরে এলাম ৷ নিলু আরো জেঁকে বসেছে আমার হৃদয়ে ৷ ভাবনার পাতাগুলো এলোমেলো করে দিচ্ছে ৷ তারপর থেকে প্রতিটি ছুটির দিন ঘুরতে শুরু করলাম ৷ নিলু একদিন বলে দিলো সেও আমাকেই চায় ৷ যেন সাওয়ালের চাঁদ হাতে পেলাম ৷ মাঝে মাঝেই অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি ৷ বন,সাগর, ঝরনা ,পাহাড়,নদী থেকে কফিশপ বাদ যান না কোন কিছু ৷ নিজেদের নিজস্ব সত্তাকে বিলীন করে দুজন দুজনার হয়ে গেছি ৷ দুজনে মিলে তৈরী হয়েছে নতুন সত্তা ৷হঠাৎ এক বৃহস্পতিবারে নিলুর ফোন থেকে ভেসে এলো না সেই চেনা কণ্ঠটি ” কাল তো ছুটি কি প্লান ? ” ৷ আমি ফোন করবার চেষ্টা করলাম আনরিচএবল ৷ তারপর অসংখ্য বৃহস্পতিবার , অসংখ্য ছুটি গত হয়েছে নিলুর ফোন থেকে কল আসেনি ৷ আমিও পায়নি তাকে ফোনে ৷ অথচ আজও বৃহস্পতিবার অথবা ছুটির দিনে অপেক্ষায় থাকি ৷ নিলুর ফেরার অপেক্ষায় ৷

আয়া সোফিয়ায় আবার আজান ও কিছু কথা

বায়েজিদ হোসেন

পুরো পৃথিবী ধুঁকছে কোভিড -১৯ বা করোনা ভাইরাসে ৷ এই বিশ্বব্যাপী মহামারীর মধ্যেও থেমে নেই ক্ষমতালোভীদের আগ্রাসী কর্মকান্ড ৷ লাদাখ সীমান্তে ভারত-চীনের যুদ্ধংদেহী অবস্থান ৷ সৈন্য সামন্ত ভারী অস্ত্রশস্ত্রের মহড়া চলছে ৷ নর্থ কোরিয়া ও ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকার মধ্য চলতে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়৷ ভূমধ্যসাগরে শক্তি বৃদ্ধিতে ব্যস্ত ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকা ৷ এর মধ্যে নতুন মাত্রা যোগ হলো তুরস্কের ইস্তাম্বুলস্থ আয়া সোফিয়া কে মসজিদ বানানোর ঘটনা ৷ গত ১০ জুলাই তুরস্কের আদালত আয়া সোফিয়া কে মসজিদ করার আদেশ দেন এবং রায়ের পরে তুর্কী প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান মসজিদ করার নির্বাহী আদেশে সই করেন ৷২৪ জুলাই শুক্রবার ৮৬ বছর পর আয়া সোফিয়ায় আজান হয় এবং জুম্মার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় ৷ এর পক্ষ বিপক্ষ নিয়ে তুমুল ঝড় বয়ে যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী ৷ তার ছোঁয়া এসেছে বাংলাদেশেও ৷ পক্ষ বিপক্ষ নিয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে টেলিভিশন , খবরের কাগজ আর সোশ্যাল মিডিয়ায় ৷ পক্ষে বিপক্ষে যাবার আগে আসুন দেখে আসি আয়া সোফিয়ার ইতিহাস ৷ রোমের সম্রাট জাস্টিনিয়ান প্রথমের আদেশে ৫৩২ এবং ৫৩৭ এর মধ্যে কনস্টান্টিনোপলের( বর্তমান ইস্তাম্বুল) খ্রিস্টান ক্যাথেড্রাল হিসাবে আয়া সোফিয়া নির্মিত হয় ৷ ব্যাসিলিকাটি মাইলাতাসের গ্রীক জিওমিটার ইসিডোর এবং ট্রেলসের অ্যান্থিমিয়াস ক্যাথেড্রালটির ডিজাইন করেছিলেন। বর্তমান জাস্টিনিয়ান ইমারতটি একই স্থানে অধিষ্ঠিত তৃতীয় গির্জা, এর আগে এটি নিকা দাঙ্গায় ধ্বংস হয়েছিল।
কনস্টান্টিনোপলের একিউম্যানিকাল মহাবিশপ এপিসোপাল সী অনুসারে ১৫১৫ সালে সেভিল ক্যাথেড্রাল সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রায় এক হাজার বছর ধরে এটিই ছিল বিশ্বের বৃহত্তম ক্যাথেড্রাল। ১২০৪ সালে, এটি চতুর্থ ক্রুসেডারদের দ্বারা লাতিন সাম্রাজ্যের অধীনে রোমান ক্যাথলিক ক্যাথেড্রালে রূপান্তরিত করা হয়েছিল। ১২৬১ সালে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের ফিরে আসার পরে পূর্ব অর্থোডক্স চার্চে পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল। ১৪৫৩ সালে উসমানীয় শাসক দ্বিতীয় মুহাম্মদ হাতে বাইজেন্টাইন সম্রাট একাদশ কনস্ট্যান্টাইন ড্রাগাসেসের পরাজয়ের মাধ্যমে কনস্টান্টিনোপল এর পতনের ঘটে ৷ প্রায় ১৮ বার আক্রমনের পর উসমানীয়রা কনস্টান্টিনোপল দখল করতে সামর্থ্য হন৷
তরুণ তুর্কী সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদ অর্থোডক্স প্যাট্রিয়ার্খকে মন্ত্রীর মর্যাদা প্রদান করেন, গির্জায় সমবেত হয়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে নিয়মিত প্রার্থনা করার অনুমতি দেন। ধর্মযাজকদের ওপর হতে জিজিয়া কর মওকুফ করে দেন।যুদ্ধে কনস্ট্যান্টিনোপলের বহু খ্রিস্টান বাসিন্দা নিহত হয়েছিলেন। অনেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। ফলে নগরের জনসংখ্যা কমে যায়। অচিরেই রোমেলি ও আনাতোলিয়া থেকে বহু নাগরিক এনে তাদেরকে কনস্ট্যান্টিনোপলে বসবাস করানো হয়। ফলে নতুন তুর্কি রাজধানীতে মুসলিমরা সংখ্যাগুরু ও খ্রিস্টানরা সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়। ফলে উপাসনালয়ের সংখ্যায়ও পরিবর্তন আসে। আয়া সোফিয়া ছিল কনস্ট্যান্টিনোপলের সবচেয়ে বড় চার্চ ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। সেই যুগে এশিয়া ও ইউরোপের প্রতিদ্বন্দ্বী সাম্রাজ্য ও সালতানাতসমূহে ধর্মের প্রভাব ছিল খুব বেশি। মুসলিম আইনশাস্ত্র (ফিকহ) অনুযায়ী কোন মুসলিম শহরে অমুসলিমদের জৌলুসপূর্ণ ধর্মীয় স্থাপনা থাকবে না, যা মসজিদের চেয়ে বৃহৎ ও অধিক দৃষ্টিগোচর।
অতএব আয়া সোফিয়াকে চার্চ হিসেবে বহাল রাখার সুযোগ ছিল না। একটা উপায় ছিল ভেঙে ফেলা। কিন্তু উত্তম বিকল্প হল মসজিদে রূপান্তর।১৪৫৩ সালের ১ জুনে মসজিদে রূপান্তরিত আয়া সোফিয়ায় প্রথমবারের মত জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়, যাতে ইমামতি করেন সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদ এর শিক্ষক শায়খ আক শামসুদ্দিন। যা মসজিদ হিসাবে বহাল ছিল প্রায় পাঁচশত বছর ৷ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর তুরস্কে উসমানীয় খেলাফতের অবসান হয়। কামাল পাশা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি গ্রহণ করে এবং স্থাপনাটি ১৯৩৫ সালে আধুনিক তুরস্কের স্থপতি ও স্বাধীন তুরস্কের প্রথম রাষ্ট্রপতি “মুস্তফা কামাল আতাতুর্ক” যাদুঘরে রূপান্তর করেন। যা তুরস্কের দ্বিতীয় দর্শার্থী আসা পর্যটন কেন্দ্রে রুপ নেয় ৷ ২০২০ সালে রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান এর মন্ত্রীসভা ১৯৩৫ সালে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাতিল করে আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রুপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেয় ৷
এখন প্রশ্ন হল যে আইনের বলে ১৪৫৩ সালে আয়া সোফিয়াকে প্রথম মসজিদে রূপান্তরিত করা হয় অর্থাৎ কোন মুসলিম শহরে অমুসলিমদের জৌলুসপূর্ণ ধর্মীয় স্থাপনা থাকবে না, যা মসজিদের চেয়ে বৃহৎ ও অধিক দৃষ্টিগোচর। একই নিয়মে রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানের মাধ্যমে আয়া সোফিয়া পুনরায় মসজিদে রুপান্তরিত হওয়ার পর বিভিন্ন অমুসলিম দেশ সমূহের সরকার প্রধানগন যদি তাদের দেশের গ্রান্ড মসজিদ গুলোকে পরিবর্তন করে তা কি মুসলিম বিশ্বের জন্য সুখকর হবে ? বা মুসলিম বিশ্ব কি তা মেনে নিবে ? উদাহরণ স্বরুপ যদি বলি অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ( যদিও হিন্দুধর্মালম্বীরা রামের জন্মস্থান হিসাবে দাবী করেন ) এর জায়গায় একই নিয়মে ভারত সরকার মন্দির তৈরীর উদ্যোগ নেয় তা কি মুসলিম বিশ্ব মেনে নিবে ? এরদোয়ান জাদুঘরকে মসজিদে রূপান্তরিত করলো নাকি চার্চকে মসজিদে নাকি মুসলিম বিশ্বকে একটি ন্যাক্কারজনক অবস্থানে ঠেলে দিলো ? যুগে যুগে সংখ্যা গুরুদের শাসকগোষ্ঠী ধর্মকে পুঁজি করে ক্ষমতার মসনদ পাকা করার জন্য ধর্মকে সামনে ঠেলে ফলে ধর্ম হয় সমালোচিত কিন্ত ধর্মান্ধ সাধাণ সংখ্যাগুরুদের ভোটে শাসকগোষ্ঠীর লাভের পাল্লা ভারী হয় ৷ আসলে ভাটা পড়তে থাকা জনপ্রিয়তা আবার আকাশচুম্বী করাই মূল উদ্দেশ্য আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরিত এরদোয়ান প্রশাসনের একটি কৌশল মাত্র ৷

তথ্য সুত্র: উইকিপিডিয়া

আয়া সোফিয়ায় আবার আজান ও কিছু কথা

আয়া সোফিয়া

গর্জে ওঠো আরো একবার

বাঙলা তুমি বীর জাত গর্ভা।
বাঙালী তুমি বীরের জাত!
তুমি লড়েছো, মেরেছো , মরেছো বার বার
শুরুটা ঠিককোথা থেকে করবো,
ঠাহর করে উঠতে পারছি না ৷
আচ্ছা , শুরুটা পিশাচ আর্যদের থেকেই করি
তোমার ভূমিতে তোমাকে অচ্ছুত অনার্য বলে
শুরু করেছিল নিপীড়নের স্টিম রােলার
তুমি লড়েছো, মেরেছো, মরেছো ৷
তারপর একে একে এলো কত হায়েনা
কত ডাকু, লুন্ঠনকারী , দখলকারী এলো।
কেউ এলো ধর্মের পসরা সাজিয়ে বীর হয়ে
কেউ ব্যবসার ছলে জালিম হয়ে ৷
চাপালো ধর্ম, কেউ নীল চাষ
কেড়ে নিতে চাইলো ভাষা,
শিল্প,সংস্কৃতি,স্বাধীনতা
কেড়ে নিতে চাইলো ছিল যত অভিলাষ ৷
যুগে যুগে তোমার শত কুপুত্র
ভিনদেশীদের সাথে মিলিয়ে হাত,
ঘটিয়েছে তোমার হাজারো বীর পুত্রের রক্তপাত
তোমার সুপুত্রগণ বার বার ছেড়েছে হুংকার
লড়েছে,মেরেছে,মরেছে বাঁচাতে তোমার অহংকার ৷

বাঙলার সুপুত্রগন , আবার একজোট হও,
গর্জে ওঠো আরো একবার
পদপিষ্ট করো অত্যাচারী, চোর, বাটপার ,
দুর করো বাঙলার বুকে গজিয়ে ওঠা
পাপ,তাপ,ভন্ডামী আর আছে যতো অনাচার ৷

শেষ ট্রেন

মোহনগঞ্জের শেষ ট্রেন ঠিক পৌনে ছ’টায় ছেড়ে
পৌনে ন’টায় পৌঁছে গৌড়ীপুরে ৷
ছাব্বিশ সন আগে বলেছিলে
অফিসের কাজ ইতি টেনে
আসবো চলে কোন এক দিন শেষ ট্রেনে
ইইবে দেখা, কইবো কথা
ঘুচাবো দোহার মনের ব্যথা ৷
সেই থেকে আজ
ফেলে সব কাজ
ঠিক পৌনে ন’টায়
গৌড়ীপুরের ব্যস্ত প্লাটফর্মে
দুটি চঞ্চল চোখ খুজে ফিরে
চপল যুগল আঁখি ৷
হয়ত শিডিউল বিপর্যয়ে
অথবা অফিসের কাজে
আসতে পারোনি মোর পর্ণকুটীরে
তবুও অপেক্ষায় কাটে দিন শেষ ট্রেনের
ট্রেন আসবে , শেষ ট্রেন আসবে, সে আসবে
আসবে স্বপ্নের শেষ ট্রেনে ৷